ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ঃ খুলনাস্থ বাংলাদেশ নৌবাহিনী ঘাঁটি তিতুমীরে আজ মঙ্গলবার (২৪-১২-২০১৯) ‘সুনীল অর্থনীতির বিকাশে উপকূলীয় জনপদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জনাব তালুকদার আব্দুল খালেক। দেশের মেরিটাইম খাতে গবেষণা ভিত্তিক অন্যতম প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ই›সটিটিউট অফ মেরিটাইম রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (বিমরাড) উক্ত সেমিনারের আয়োজন করে।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের উপক‚লবাসীর উন্নয়নের লক্ষ্যে বিমরাড এর তাৎপর্যপূর্ণ উদ্যোগ এবং গবেষণা, সক্ষমতা ও সচেতনতা তৈরিতে সক্রিয় অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া, সেমিনারে চারটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা বিশ্বদ্যিালয়ের অধ্যাপক ড. সেলিনা আহমেদ, ড. মোঃ ওয়াসিউল ইসলাম ও ড. নাজমুস সাদাত এবং এওএসইডি এর নির্বাহী পরিচালক শামিম আরফিন।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বহুমাত্রিক কর্মকান্ড ও জনজীবনের চিত্র তুলে ধরা এবং সমস্যাবলী পর্যালোচনা ছিল সেমিনারের প্রধান উদ্দেশ্য। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে পর্যটনের মূল কেন্দ্র হিসেবে এটির সম্ভাবনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ সম্পর্কে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া, দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতিকে লালন ও বিকাশের বিষয়টিও সেমিনারে আলোচিত হয়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের উপক‚লবাসীর নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বিভিন্ন দিক নিয়ে উপক‚লীয় সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্টদের মতবিনিময়ধর্মী দুটি অধিবেশন থেকে বিভিন্ন গঠনমূলক পরামর্শ ও প্রস্তাবনা উঠে আসে। সেমিনারে বিমরাড চেয়ারম্যান সাবেক নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ বলেন, সচেতনতা তৈরি, গবেষণা, উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, শিক্ষাপ্রদান, মতবিনিময় এবং নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে সমুদ্র সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে ‘বিমরাড’ জাতির উপক‚লীয় জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশা পূরণ করবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন বিমরাড ভবিষ্যতে বিশ্বের মেরিটাইম জনগোষ্ঠীর সেরা কেন্দ্রভ‚মি হয়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বিমরাড ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এতে দুই প্রতিষ্ঠানের মাঝে সুনীল অর্থনীতির উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণ ও বাংলাদেশের ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ সংক্রান্ত গবেষণা ও সক্ষমতা তৈরিতে সহযোগিতা এবং যৌথ তৎপরতার বিষয়টি উপস্থাপিত হয়েছে। সেমিনারে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুনীল অর্থনীতির বিভিন্ন সেক্টরের অংশীজন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের কর্মকর্তাবৃন্দ, সমুদ্র বিষয়ক গবেষক, একাডেমিশিয়ান, সরকারি ও বেসরকারী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, ব্যবসায়ীগণ, উপক‚লীয় ও বনাঞ্চলের প্রতিনিধিবর্গ, উদ্যোক্তা, উপক‚লীয় সাংবাদিক এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় একটি সেবাধর্মী ও অলাভজনক সামুদ্রিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গত ০৩ জুলাই ২০১৮ তারিখে যাত্রা শুরু করে। দেশের সমুদ্র বিষয়ে দেশের তরুণ সমাজকে সচেতন এবং আকৃষ্ট করার পাশাপাশি সমুদ্র সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরী এবং সুনীল অর্থনীতি (বøু-ইকোনমি), সমুদ্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তাসহ সামুদ্রিক সকল বিষয়ে গবেষণামূলক কারিগরি ও নীতিনির্ধারণী সুপারিশ প্রণয়ন প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য।