যশোর, ০২ জুনঃ- বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৭৩তম ফ্লাইট ক্যাডেট কোর্স ও ডিরেক্ট এন্ট্রি-২০১৬এ ফ্লাইট ক্যাডেট কোর্সের কমিশন প্রাপ্তি উপলক্ষে গ্রীষ্মকালীন গ্র্যাজুয়েশনের রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০১৬ আজ বৃহস্পতিবার (০২-৬-২০১৬) যশোরে অবস্থিত বিএএফ একাডেমির প্যারেড স্কোয়ারে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার, বিবিপি, এনডিসি, এসিএসসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। তিনি ফ্লাইট ক্যাডেটদের পদক, সনদপত্র এবং ফ্লাইং ব্যাজ প্রদান করেন। ফ্লাইট ক্যাডেট একাডেমি আন্ডার অফিসার সাবিক-এন-আহমেদ ৭৩তম ফ্লাইট ক্যাডেট কোর্সে সেরা চৌকস কৃতিত্বের জন্য “সোর্ড অব অনার” এবং ফ্লাইট ক্যাডেট স্কোয়াড্রন জুনিয়র আন্ডার অফিসার শাহরুখ ইবনে মাহফুজ উড্ডয়ন প্রশিক্ষণে সেরা কৃতিত্বের জন্য “বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ট্রফি” লাভ করেন। ৭৩তম ফ্লাইট ক্যাডেট কোর্স (গ্রাউন্ড ব্রাঞ্চ)-এ সেরা কৃতিত্বের জন্য ফ্লাইট ক্যাডেট জুনিয়র আন্ডার অফিসার এএসএম শাহ্নেওয়াজ,“বিমান বাহিনী প্রধান” এর ট্রফি এবং ফ্লাইট ক্যাডেট সিনিয়র স্কোয়াড্রন আন্ডার অফিসার মোঃ সাব্বির আহমেদ জেনারেল সার্ভিস প্রশিক্ষণে সেরা কৃতিত্বের জন্য “কমান্ড্যান্টস ট্রফি” লাভ করেন। এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে প্রথমবারের মত পিটি-৬ বিমানের মৌলিক প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারী ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট নাজিয়া আফরিনকে ফ্লাইং ব্যাজ পরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া নৌ বাহিনীর একজন কর্মকর্তাকেও বিমান বাহিনী একাডেমী থেকে উড্ডয়ন প্রশিক্ষন শেষে ফ্লাইং ব্যাজ প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০১৬ (সামার টার্ম) এ ২নং স্কোয়াড্রন চ্যাম্পিয়ন বিবেচিত হয়ে একাডেমি পতাকা লাভ করে।
অনুষ্ঠানে বিমান বাহিনী প্রধান তাঁর ভাষণে প্রশিক্ষণোত্তীর্ণ ফ্লাইট ক্যাডেট ও অফিসার ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে বলেন, “দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়া এখন সময়ের দাবি এবং তোমরাই হবে তার অগ্রদূত। একবিংশ শতকের অঙ্গীকার ও প্রত্যয়কে সামনে রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ এর আওতায় ইতোমধ্যে বিমান বাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে F-7BGI যুদ্ধ বিমান, YAK-130 এ্যাডভান্সড্ জেট ট্রেইনার, Agusta Westland I Mi-171SH হেলিকপ্টার এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিভিন্ন ধরনের আকাশ প্রতিরক্ষা র্যাডার। এছাড়াও বিমান বাহিনীতে প্রথমবারের মত সংযোজন করা হয়েছে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র Surface to Air Missile। পাশাপাশি F-7 যুদ্ধ বিমানসহ সব ধরনের বিমান, র্যাডার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতির সুষ্ঠু, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী রক্ষণাবেক্ষণ এবং ওভারহোলিং এর লক্ষ্যে নির্মিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু এ্যারোনটিক্যাল সেন্টার। একই সাথে Mi সিরিজ হেলিকপ্টার ওভারহোলিং এর লক্ষ্যে ২১৬ এমআরও ইউনিটের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এই সকল সংযোজনের ফলে বিমান বাহিনীকে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি কার্যকর, দক্ষ ও আধুনিক বাহিনী হিসেবে অনেক দূর নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।”
এই কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে ০৮ জন মহিলা ক্যাডেটসহ মোট ৪৭ জন ফ্লাইট ক্যাডেট কমিশন লাভ করে। ফ্লাইট ক্যাডেট একাডেমি আন্ডার অফিসার সাবিক-এন-আহমেদ আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ পরিচালনা করেন। কুচকাওয়াজ শেষে বিমান বাহিনী একাডেমির সকল প্রকারের প্রশিক্ষণ বিমানের সমন্বয়ে এক আকর্ষণীয় ফ্লাই পাস্ট অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে প্যারেড স্কোয়ারে এসে উপস্থিত হলে বিমান বাহিনী প্রধানকে বিমান বাহিনী একাডেমির কমান্ড্যান্ট এয়ার কমডোর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম স্বাগত জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের এয়ার অধিনায়ক এয়ার কমডোর মোঃ শফিকুল আলম, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকগণ, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আমন্ত্রিত বেসামরিক কর্মকর্তা এবং প্রশিক্ষণোত্তীর্ণ ফ্লাইট ক্যাডেটদের অভিভাবকবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।