ঢাকা, ০৬ জুন ২০২৩ (মঙ্গলবার)ঃ পার্বত্য চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত শহিদ সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান এর আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ হতে তার পরিবারের কাছে সেনাবাহিনী প্রধানের দিক নির্দেশনায় আজ মঙ্গলবার (০৬-৬-২০২৩) একটি গৃহ হস্তান্তর করা হয়। সেনাবাহিনী প্রধানের পক্ষে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ৭ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার বরিশাল এরিয়া মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা, আরসিডিএস, এনডিসি, পিএসসি গৃহটি হস্তান্তর করেন। চার তলা ভিত্তির উপর নির্মিত গৃহটির এক তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
শহিদ সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রামে বান্দরবান রিজিয়নের অধীনস্থ রুমা জোনে কর্মরত থাকাকালে গত ০২ ফেব্রæয়ারি ২০২২ তারিখ জেএসএস পন্থী একটি চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী দলের আগমনের তথ্যের ভিত্তিতে তার নেতৃত্বে একটি নিরাপত্তা টহল দল বথিপাড়া এলাকায় গমন করে। টহল দলটি বথিপাড়া এলাকায় পৌঁছালে নিকটস্থ একটি জুম ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত টহল দলের উপর গুলি বর্ষণ শুরু করে। তার সাহসী নেতৃত্বে টহল দল সন্ত্রাসীদের পাল্টা জবাব দিলে জেএসএস মূল দলের তিন জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী বন্দুক যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়। এসময় পলায়নপর সন্ত্রাসীদের এলোপাথারি গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে টহল কমান্ডার সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন। উক্ত অভিযানে সেনা টহল দল কর্তৃক সন্ত্রাসীদের ব্যবহƒত ১টি এসএমজি, ২৪৯ রাউন্ড তাজা গুলি, ৩টি অ্যামোনিশন ম্যাগাজিন, ৩টি গাদা বন্দুক, গাদা বন্দুকের ৫ রাউন্ড গুলি, ৪ জোড়া ইউনিফর্ম এবং চাঁদাবাজিদের নগদ ৫২,৯০০ টাকা জব্দ করা হয়।
শহিদ সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ইষ্ট বেংগল রেজিমেন্টে যোগদান করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদানের পর সুদীর্ঘ ৩০ বছর চাকুরি জীবনে তিনি মেধা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট/সংস্থায় তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব পালনে সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান দেশপ্রেম ও কর্তব্যনিষ্ঠার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান এর মহান আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ হতে প্রদত্ত এই গৃহ তার স্ত্রী এবং দুই পুত্র সন্তানের সুন্দর ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করণে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।