ঢাকা, ১২ মার্চ ২০১৮: অনুশীলন শান্তিদূত-৪এর সমাপনী অনুষ্ঠান আজ সোমবার (১২-৮-২০১৮) রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসস্থ বাংলাদেশ ইস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং (বিপসট) এ অনুষ্ঠিত হয় । মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আর্ন্তজাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উক্ত অনুশীলনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষনা করেন এবং অনুশীলনে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক (General Abu Belal Muhammad Shafiul Huq), সহ দেশ ও বিদেশের উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক আমন্ত্রিত অতিথি এবং Mr. Michael L. Smith, Director, Office of Global Programs and Initiatives, Bureau of Political-Military Affairs, U.S. Department of State উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ প্রদর্শনী (Display) আয়োজনের মাধ্যমে দেশীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়।
দু’সপ্তাহ ব্যাপি অনুষ্ঠিত অনুশীলন কার্যক্রমে ২১টি দেশের মোট ১১২৩জন দেশী/বিদেশী অংশগ্রহণকারী যোগদান করেন। দেশ সমূহ হলো বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, ফিজি, ঘানা, গ্রেট ব্রিটেন, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, কির্ঘিজস্তান, মালয়েশিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, নিউজিল্যান্ড, পেরু, ফিলিপাইন, রুয়ান্ডা, সেনেগাল, সিয়েরালিওন, দক্ষিন কোরিয়া, শ্রীলংকা, ইউ এস এ এবং ভিয়েতনাম।
ইউএস প্যাসিফিক কমান্ড দ্বারা পরিচালিত মাল্টি ন্যাশনাল পিসকিপিং ইভেন্ট (MPE) যা প্রতি বছর এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে পরিচালিত হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং (বিপসট) এ অনুষ্ঠিত হয় ‘অনুশীলন শান্তিদূত–৪’। অনুশীলনটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের উপর পরিচালিত একটি বহুজাতিক অনুশীলন, যা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ইউ এস প্যাসিফিক কমান্ড (ইউএসপ্যাকম) কর্তৃক যৌথ ভাবে আয়োজিত গে¬াবাল পিস অপারেশনস্ ইনিশিয়েটিভ (জিপিওআই) এর পৃষ্ঠপোষকতায় শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের উপর পরিচালিত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত শান্তিরক্ষীদের কৌশলগত এবং কারিগরী দক্ষতাবৃদ্ধি করাই শান্তিদূত-৪ এর উদ্দেশ্য।
অনুশীলন শান্তিদূত–৪ তিনটি ভাগে একই সময়ে পরিচালিত হয়েছে; ফিল্ড ট্রেনিং ইভেন্ট (এফটিই), স্টাফ ট্রেনিং ইভেন্ট (এসটিই) এবং ক্রিটিক্যাল এনাবেলার ক্যাপাবিলিটি এনহান্সমেন্ট (২সিই)। অনুশীলনের অন্যতম বিষয়বস্তু হিসেবে ইউএন মিশন এলাকায় গমনপূর্ব প্রশিক্ষন, পারস্পরিক যোগাযোগ ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মূল বিষয় গুলোর উপর ধারনা প্রদান করা হয়েছে।
অনুশীলন শান্তিদূত–৪ এর মাধ্যমে অংশগ্রহনকারী দেশসমূহের মধ্যে আঞ্চলিক বন্ধন, নিরাপত্তা ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে দক্ষতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়। ফিল্ড ট্রেনিং ইভেন্ট প্রশিক্ষনে বিভিন্ন ধরনের লেইন ট্রেনিং এর পাশাপাশি শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের সাথে সংশি¬ষ্ট বিভিন্ন বাস্তবধর্মী পরিস্থিতিরআলোকেপ্রশিক্ষনপ্রদানহয়েছে। উক্ত প্রশিক্ষনকার্যক্রম অবলোকনকরারজন্য ইউএন ও আন্তর্জাতিকসংস্থার উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিরাসার্বক্ষনিকভাবেউপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহনকারী শীর্ষ দেশ সমূহের মধ্যে অন্যতম। বিপসট এর মাধ্যমে প্রদানকৃত উন্নত প্রশিক্ষন শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে ভূমিকা পালনে অন্যতম সহায়ক বলে প্রতীয়মান হয়। অনুশীলন শান্তিদূত–৪ এর মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও পারস্পরিক সহযোগিতা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের গ্রহণযোগ্যতা অনেক গুন বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা যায়।