কক্সবাজার, ০৬ মে ২০১৭) ঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার (০৬ মে ২০১৭) বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়িত ৮০ কিঃমিঃ দীর্ঘ কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শুভ উদ্বোধন করেন।
সেনাবাহিনীর ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনষ্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন ১৯৯৩ সালে এই মেরিন ড্রাইভ সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রকল্পটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করে। পরবর্তীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পূনরায় প্রকল্পটির কাজ হাতে নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সরকার সম্পূর্ণ প্রকল্পটিকে ৩টি ভাগে ভাগ করে অর্থায়ন করে এবং তা নির্মাণ এর নির্দেশনা প্রদান করে। প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০১৭ সালের এপ্রিলে কাজ সম্পন্ন হয়।
সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন সাগর থেকে সড়কটি রক্ষায় ইট, সিমেন্ট, আর লোহা দিয়ে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরী টেট্রাপড ব্যবহার করে। এই টেট্রাপড ব্যবহারের প্রেক্ষিতে মে ২০১৬ এর প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাত থেকে হিমছড়িকে রক্ষা করা সম্ভব হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে এর সাথে সংশ্লিষ্ট সেনা সদস্যদের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে প্রায়ই রাস্তাটির ভাঙ্গন ছিল মূল সমস্যা। অন্যদিকে পাহাড় বেয়ে আসা পানির ঢল সড়ক বাঁধকে ক্ষতিগ্রস্থ করছিল। যে কারনে রাস্তাটিকে প্রতিনিয়তই পূনঃনির্মাণ করতে হয়েছিল। প্রকল্প এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী পৌঁছানোও ছিল যথেষ্ট কষ্টসাধ্য ও সময় সাপেক্ষ। লবণাক্ত আবহাওয়ায় রড, প্রকৌশল যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সংবেদনশীল ধাতুতে মরিচা ধরে যাওয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশনকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। ঝড় ও প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করতে হয়েছিল সেনাসদস্যদের। উল্লেখ্য, প্রকল্প বাস্তবায়নকালে ২০১০ সালের ১৫ জুন পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে সেনাবাহিনীর ০৬ জন সদস্য মৃত্যুবরণ করেন।
এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ সৃষ্টি হলো। ফলে এ এলাকার জনগণের জীবন যাত্রার মান, কর্মসংস্থান, শিক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি পর্যটন শিল্পে বড় সম্ভাবনার সূচনা হবে। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে আরো একধাপ এগিয়ে নিতে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখবে এই মেরিন ড্রাইভ সড়কটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রীপরিষদের সদস্যবৃন্দ, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক (General Abu Belal Muhammad Shafiul Huq) নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ (Admiral Nizamuddin Ahmed) বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল আবু এসরার (Air Chief Marshal Abu Esrar), স্থানীয় সংসদ সদস্য, সামরিক/অসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।