ঢাকা, ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ঃ গণচীনে নির্মিত বাংলাদেশ নৌবাহিনী যুদ্ধজাহাজ ‘ওমর ফারুক’ ও ‘আবু উবাইদাহ’ আজ বৃহস্পতিবার (০৯-০১-২০২০) মোংলা নেভাল জেটিতে এসে পৌঁছায়। এসময় কমান্ডার খুলনা নৌ অঞ্চল রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জাহাজ দুটিকে স্বাগত জানান। জাহাজ দুটি’র আগমন উপলক্ষে নেভাল জেটিতে নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও নাবিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
আধুনিক এ যুদ্ধজাহাজ দুটির প্রতিটি দৈর্ঘ্যে ১১২ মিটার এবং প্রস্থে ১২.৪ মিটার যা ঘন্টায় সর্বোচ্চ ২৪ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম। প্রতিটি জাহাজ বিভিন্ন আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জামে সুসজ্জিত। জাহাজ দুটিতে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কামান, ভূমি থেকে আকাশে এবং ভূমি থেকে ভূমিতে উৎক্ষেপনযোগ্য ক্ষেপনাস্ত্র, অত্যাধুনিক সারভাইলেন্স র্যাডার, ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম, সাবমেরিন বিধ¡ংসী রকেট, র্যাডার জ্যামিং সিস্টেমসহ বিভিন্ন ধরণের যুদ্ধ সরঞ্জামাদি। সার্বিকভাবে শত্রু বিমান, জাহাজ ও স্থাপনায় আঘাত আনার পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে এই দুটি জাহাজের। এছাড়াও হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য ডেক ল্যান্ডিংসহ জাহাজে সমুদ্রে উদ্ধার তৎপরতা, সন্ত্রাস ও জলদস্যু দমন এবং চোরাচালান বিরোধী নানাবিধ অপারেশন পরিচালনার সক্ষমতা রয়েছে। জাহাজ দুটি দেশের জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি দূর্যোগকালীন জরুরি উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা, অবৈধ মৎস্য নিধন, সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় মানবপাচার ও চোরাচালান প্রতিরোধ, জলদস্যুতা দমন, জেলেদের নিরাপত্তা বিধানসহ বর্তমান সরকারের ব¬ু ইকোনমির বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
নতুন এ যুদ্ধজাহাজ দুটি নৌবহরে অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে নৌবাহিনীর অপারেশনাল সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়। উল্লেখ্য, ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক আগ্রহ ও নির্দেশনায় সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে বহুমূখী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে নৌবহরে যুক্ত হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি ও যুদ্ধ সরঞ্জামে সজ্জিত আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন, হেলিকপ্টার ও মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট। নৌবাহিনীর আধুনিকায়ন ও নৌবহরের ত্রিমাত্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে নৌবাহিনীর জাহাজ ‘ওমর ফারুক’ ও ‘আবু উবাইদাহ’ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে।
এর আগে ১৮ ডিসে¤¦র ২০১৯ তারিখ সাংহাইয়ের সেনজিয়া শিপইয়ার্ডে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধজাহাজ দুটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। গত ২৩ ডিসে¤¦র ২০১৯ জাহাজ দুটি গণচীনের সাংহাই বন্দর হতে যাত্রা শুরু করে ‘জানজিয়াং’ বন্দর ও মালয়েশিয়ার ‘ক্লাং’ বন্দর হয়ে প্রায় ৮ হাজার কিলোমিটার সমুদ্রপথ অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়।