চট্টগ্রাম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ঃ চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে আজ বুধবার (৩০-১২-২০২০) মিডশীপম্যান ২০১৮/এ ব্যাচ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার (ডিইও) ২০২০/বি ব্যাচের নবীন কর্মকর্তাদের শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও টেলি কনফারে›েসর মাধ্যমে উপস্থিত থেকে মিডশীপম্যান ২০১৮/এ ব্যাচ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২০/বি ব্যাচের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৩১ জন মিডশীপম্যান এবং ২০২০/বি ব্যাচের ৩২ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ ৬৩ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন। এদের মধ্যে ৩ জন মহিলা মিডশীপম্যান এবং ৬ জন মহিলা ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার রয়েছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল (অফসরৎধষ গ ঝযধযববহ ওয়নধষ) ,এনবিপি, এনইউপি,এনডিসি,এএফডব্লিউসি, পিএসসি, ‘সোর্ড অব অনার’ ও বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্য অর্জনকারীদের হাতে পদক তুলে দেন। সদ্য কমিশনপ্রাপ্তদের মধ্যে মিডশীপম্যান ২০১৮/এ ব্যাচের মেহরাব হোসেন অমি সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জন করে সেরা চৌকস মিডশীপম্যান হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ প্রাপ্ত হন। এছাড়া মিডশীপম্যান হামিদ হোসেন আদনান প্রশিক্ষণে ২য় সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী হিসেবে ‘নৌ প্রধান স্বর্ণ পদক’এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২০/বি ব্যাচ হতে এ্যাক্টিং সাব লেফটেন্যান্ট মোঃ ফরিদুর রহমান খান শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জনকারী হিসেবে ‘বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণ পদক’ লাভ করেন।
ভিডিও টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে কুচকাওয়াজ পরিদর্শনের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স¥রণ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার দায়িত্বভার গ্রহণের পর জাতির পিতার প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে নৌবাহিনীকে একটি যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যুদ্ধজাহাজ সংযোজন এবং বিদ্যমান জাহাজসমূহের অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সমুদ্রসীমা রক্ষার পাশাপাশি সমুদ্র সম্পদকেও যেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগানো যায় এলক্ষ্য নিয়েই সরকার ব্লু-ইকনোমির বিভিন্ন কর্মকান্ডের গুরুত্ব আরোপ করেছে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফ্টসহ আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে ভবিষ্যতে আরও উন্নততর জাহাজ এবং আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজনের পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। পেকুয়ায় স্থায়ী সাবমেরিন ঘাঁটি বানৌজা শেখ হাসিনা নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। নৌবাহিনীর দক্ষ ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত শিপইয়ার্ড ও ডকইয়ার্ডসমূহ ইতোমধ্যে বাণিজ্যিক জাহাজের পাশাপাশি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের সক্ষমতা অর্জন করেছে।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, নবীন কর্মকর্তারা নেভাল একাডেমি থেকে অর্জিত জ্ঞান যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেদেরকে যোগ্য কর্মকর্তা হিসেবে গড়ে তুলবে এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে এই প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও অগ্রগতির পথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে। তিনি পেশা হিসেবে দেশ সেবার এ পবিত্র দায়িত্বকে বেছে নেয়ায় নবীন কর্মকর্তাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। নবীন কর্মকর্তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অটুট রাখার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাবে বলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।………………………………. (প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের কপি সংযুক্ত)।
সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং শিক্ষা সমাপনী ব্যাচের অভিভাবকগণ রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন।