ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর: বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠার ৫১ বছর পূর্তি উদযাপন করে। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জন্ম নেয়া বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এই দিনটিকে ‘বিমান বাহিনী দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন ও বিমান বাহিনীর প্রতিষ্ঠা দিবস একই তারিখে হওয়ায় দিনটি অধিকতর আনন্দময় হয়ে উঠেছে। ১৯৭১ সালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের আপামর জনতার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিমান বাহিনীর অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ পাকিস্তান বিমান বাহিনীর পক্ষ ত্যাগ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণের পাশাপাশি বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাগণ ডেপুটি চীফ অব স্টাফ ও সেক্টর কমান্ডারের মত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনগুলোতে যুদ্ধের গতি-প্রকৃতিকে সম্পূর্ণ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য একটি স্বতন্ত্র বিমান বাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভূত হয়। আর এ লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার প্রদত্ত একটি অটার বিমান, একটি ড্যাকোটা বিমান ও একটি অ্যালুয়েট হেলিকপ্টার এবং বাঙালি বৈমানিক, কারিগরি পেশার বিমানসেনা ও বেসামরিক বৈমানিকসহ ৫৭ জন সদস্য নিয়ে ভারতের নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে ‘কিলো ফ্লাইট’ নামে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী যাত্রা শুরু করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ৫০টিরও অধিক বিমান অভিযান সাফল্যের সাথে পরিচালনার মাধ্যমে ‘কিলো ফ্লাইট’ আমাদের বিজয়কে ত্বরান্বিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।
৫১ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে বিমান বাহিনী কর্তৃক ঢাকার আকাশে Mig-29 ও F-7 Series যুদ্ধ বিমান, C-130 পরিবহন বিমান এবং Mi-Series ও Bell-212 হেলিকপ্টারের সমন্বয়ে একটি মনোমুগ্ধকর ফ্লাইপাস্ট-এর আয়োজন করা হয়। কিলো ফ্লাইটের সদস্যগণের সাহসিকতাপূর্ণ অবদানকে সম্মান প্রদর্শনের অংশ হিসেবে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, বিবিপি, বিইউপি, এনএসডব্লিউসি, এফএডব্লিউসি, পিএসসি কিলো ফ্লাইটের অধিনায়ক ও সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল সুলতান মাহমুদ, বীর উত্তম, এসিএসসি, (অবঃ)-এর বাসভবনে গিয়ে তাঁর সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করতঃ বিমান বাহিনীর সকল সদস্যের পক্ষ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। এছাড়াও বিমান বাহিনীর ঘাঁটি, ইউনিট ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত ব্যানএয়ার কন্টিনজেন্টসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়।
দিবসটি উদযাপনের অংশ হিসেবে সন্ধ্যায় এক আকর্ষণীয় ও মনোমুদ্ধকর আতসবাজির আয়োজন করা হয়।