ঢাকা, ১১ নভেম্বর ২০২০: ঢাকা সিএমএইচ-এ জোড়া মাথা বিযুক্তকরণ সফল অপারেশন (Operation Freedom) মাধ্যমেই শিশুদ্বয় গত ০১ বছর যাবৎ সুস্থ জীবন যাপন করছে এবং বর্তমানে সিএমএইচ ঢাকায় ভর্তি অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। শিশুদ্বয়ের ধারাবাহিক চিকিৎসা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গত ২৭ অক্টোবর ২০২০ তারিখে হাঙ্গেরী হতে আগত ০৪ জন চিকিৎসকের উপস্থিতিতে দেশের সামরিক ও অসামরিক চিকিৎসকগণের সমম্বয়ে শিশু রাবেয়া এর Crianioplasty অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। গত ০৬ দিন যাবৎ শিশু রাবেয়া সিএমএইচ ঢাকা এর Post Operative Word এ চিকিৎসাধীন রয়েছে। রাবেয়া অনেকাংশেই ভাল আছে এবং প্রায় স্বাভাবিক কথা-বার্তা বলতে পারে এমনকি খেলাধুলাও করতে চায়। তবে রোকেয়ার স্নায়ুগত কিছু কিছু দুর্বলতা আছে যার কারণে সে এখনও পরিপূর্ণ কথা বলতে বা হাটতে পারছেনা। তবে নিজে-নিজে খাবার গ্রহণ করতে পারছে এবং কথা বুঝতে পারছে। আশা করা যায় শীঘ্রই তার উন্নতি হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই ২০১৬ সালে পাবনা জেলার অন্তর্গত চাটমোহর থানার গ্রাম্য দম্পতি মো: রফিকুল ইসলাম এবং মোছা: তাছলিমা বেগম ঘরে জন্ম গ্রহণ করে জোড়া মাথার জমজ বাচ্চা (Cranopagus Twin), চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় (Conjoined)। এরূপ জোড়া মাথার বাচ্চার বিযুক্তকরণ কার্যক্রমে (Operation Freedom) সফলতা অর্জনের উদাহরণ অত্যন্ত কম। জোড়া মাথার জমজ শিশুর জন্য সামাজিভাবে হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়েছে বাবা-মাকে।
এহেন পরিস্থিতিতে বিষয়টি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উক্ত শিশুদ্বয়ের চিকিৎসা দায়ভার গ্রহণ করেন এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব অর্পন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় মাননীয় সেনাবাহিনী প্রধানের নির্দেশনায় সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদপ্তরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও পরিকল্পনায় ঢাকা সিএমএইচ-এ হাঙ্গেরী হতে আগত ৩৪ জন চিকিৎসক দল এবং বাংলাদেশের সামরিক ও অসামরিক চিকিৎকগণ কর্তৃক গত ০১ আগস্ট ২০১৯ তারিখ হতে ০৩ আগস্ট ২০১৯ তারিখ পর্যন্ত প্রায় ৩৩ ঘন্টা বিযুক্তকরণ অপারেশন (Operation Freedom) সলফতার সাথে সম্পন্ন করা হয়।
বর্ণিত বিযুক্তিকরণ অপারেশন (Operation Freedom) বিশ্বের ১৭তম সফল অপারেশন ও বাংলাদেশে ১ম, যা বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞাপনের জন্য একটি মাইফলক। এ অপারেশন পরিচালনার মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর চিকিৎসা ব্যবস্থা তথা রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি জাতির অবিচল আস্থা অর্জন ও আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন হয়েছে। দুটি দেশের মধ্যে সম্প্রতি সৌহার্দ্যতা বৃদ্ধি পয়েছে, যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃরদর্শিতার পরিচায়ক।