ঢাকা, ০৩ মার্চ:- বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বার্ষিক শীতকালীন মহড়া ‘উইনটেক্স-২০২১’ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে শুরু হয়ে ০৩ মার্চ ২০২১ তারিখে সমাপ্ত হয়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বিবিপি, ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি উক্ত মহড়ার বিভিন্ন কার্যক্রম সরজমিনে পরিদর্শন করেন।
সপ্তাহব্যাপী এ মহড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিদ্যমান সমরাস্ত্রের কার্যকরী যুদ্ধ সক্ষমতা মূল্যায়ন করে এর দুর্বল দিকসমূহ নির্ণয় করতঃ গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করা হয়। এ সকল গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ভবিষ্যতে আরো উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে এবং বাংলাদেশের আকাশ প্রতিরক্ষা উন্নয়নে বিশেষ সহায়ক হবে। মহড়াটি তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়- কমিউনিকেশন এক্সারসাইজ (COMEX), লজিষ্টিক এক্সারসাইজ (LOGEX) ও লাইভ এক্সারসাইজ (LIVEX)। উক্ত মহড়ার অংশ হিসেবে বুধবার টাঙ্গাইল জেলায় অবস্থিত এয়ারফিল্ডে একটি বিশেষ অপারেশন (কম্ব্যাট সার্চ এন্ড রেসকিউ) অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অপারেশনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি হতে উড্ডয়নকারী যুদ্ধ বিমান ও হেলিকপ্টারসহ বিমান বাহিনীর চৌকস কমান্ডোগণ অংশগ্রহণ করেন। শত্রুপক্ষের আকাশসীমায় বিধ্বস্ত বিমান হতে প্যারাসুটের মাধ্যমে অবতরণকারী বৈমানিককে অনুসন্ধানকরতঃ উদ্ধার করে নিজ এলাকায় ফিরিয়ে আনার কৌশল সংক্রান্ত অনুশীলন করাই উক্ত অপারেশনের মূল উদ্দেশ্য ছিল।
উক্ত শীতকালীন মহড়ার উল্লেখযোগ্য অংশ হিসেবে বুধবার (০৩-০৩-২০২১) নোয়াখালী জেলার সুধারাম এয়ারফিল্ডে একটি বিশেষ এয়ার অপারেশন অনুশীলন করা হয়। যেখানে বাংলাদেশ কে গ্রীন ল্যান্ড ও রেড ল্যান্ড নামক দুটি আলাদা রাষ্ট্রে ভাগ করা হয়। এই অনুশীলনে নোয়াখালী জেলার সুধারাম এয়ারফিল্ড রেড ল্যান্ড এর গুরুত্বপূর্ণ ফরোয়ার্ড এয়ার বেজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই বিশেষ এয়ার অপারেশনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর তিনটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টারে মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর ১৫ জন প্যারা কমান্ডো এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৩০ জন গ্রাউন্ড কম্বাট্যান্ট সুধারাম এয়ারফিল্ডে অবতরণ করে উক্ত এয়ারফিল্ড দখল করার মাধ্যমে গ্রীন ল্যান্ড এর বিজয় নিশ্চিত করেন।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বার্ষিক শীতকালীন মহড়া ‘উইনটেক্স-২০২১’ এর মাধ্যমে বিমান বাহিনীর বৈমানিকগণ আকাশ যুদ্ধের বিভিন্ন প্রকার রণকৌশল সহ যুদ্ধ বিমানের মাধ্যমে আক্রমণ, ইন্টারসেপশন, আকাশ থেকে শত্রু কবলিত স্থান পর্যবেক্ষণ, রশদ সরবরাহ, সৈন্য ও যুদ্ধাস্ত্র স্থানান্তর, স্পেশাল অপারেশন, অনুসন্ধান ও উদ্ধার মিশন সহ সকল ধরনের কলাকৌশল অনুশীলন করেন। এই মহড়ার মাধ্যমে আকাশ যুদ্ধ ছাড়াও ভূমিতে ঘাঁটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকল অনুশীলন করা হয়। মহড়াটি বিমান বাহিনীর সকল ঘাঁটি, স্টেশন ও ইউনিট ছাড়াও সিলেট, টাঙ্গাইল, লালমনিরহাট, শমশেরনগর, বরিশাল, রসুলপুর, সুধারাম সহ সারা বাংলাদেশে একযোগে পরিচালিত হয়। এ মহড়ায় বিমান বাহিনীর সকল যুদ্ধ বিমান, পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার, র্যাডার ও ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য মিসাইল ইউনিটসহ বিমান বাহিনীর সকল সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য যে, মহড়াটিকে আরও ফলপ্রসু করার জন্য অন্যান্য বাহিনীর সাথে প্রয়োজনীয় সমন্বয় কল্পে স্বল্প পরিসরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, সিভিল ডিফেন্স এবং বিএনসিসি (এয়ার উইং) অংশগ্রহণ করে।