ঢাকা, ১৯ অক্টোবর ২০১৭: ঢাকার মিরপুর সেনানিবাসস্থ ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে ( এনডিসি) “ গণমাধ্যম ও সশস্ত্র বাহিনী – ধারণা ও বাস্তবতা: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ ” শীর্ষক দিনব্যাপী এক সেমিনার আজ বৃহস্পতিবার ( ১৯-১০-২০১৭) অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড: মো: গোলাম রহমান। তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, তনু হত্যায় কেউ জড়িত থাকতে পারে। তবে তাকে বিধি বিধানের আওতায় নিয়ে আসলে বিতর্কের সুযোগ থাকে না। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে দুই একজন দায়িত্বহীন হতে পারে, তবে সবাই দায়িত্বহীন সাংবাদিকতা করে না। কোন প্রতিষ্ঠানেই সকলে খারাপ নয়। তিনি বলেন, তথ্য গোপন করা যাবে না। তথ্য গোপন করলে গুজবের উপর ভিত্তি করে অপপ্রচার হতে পারে।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন এনডিসি কমান্ডান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ারদী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ডেইলী স্টার পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহেদুল আনাম খান (অব:), মেজর জেনারেল মো: সারওয়ার হোসেন ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ফারজনা ব্রাউনিয়া।
এনডিসি কমান্ডান্ট তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে গণমাধ্যম ও সশস্ত্র বাহিনীর সম্পর্ক অনেকগুলো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- পারস্পরিক আস্থাহীনতা, একে অন্যের পেশা সর্ম্পকে পযার্প্ত জ্ঞানের অভাব, কার্যকর উদ্যোগ গ্রহনে অমূলক ভীতি, কড়াকড়ি প্রতিরক্ষা নীতিমালা এবং আভিযানিক গোপনীয়তার অপরিহার্যতা বিষয়ে মিডিয়ার অজ্ঞতা ।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) শাহেদুল আনাম খান বলেন, গণমাধ্যম হচ্ছে সশস্ত্র বাহিনীসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা। গণমাধ্যম জনগনকে অধিক তথ্য জানাতে সবসময়ই আগ্রহী। অপরদিকে সামরিক বাহিনী যথাসম্ভব কম প্রচার করতে চায়। এটাই বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের গণামাধ্যম ও সামরিক বাহিনীর সম্পর্কের বৈশিষ্ট। গনমাধ্যম সত্য প্রকাশে তৎপর। অন্যদিকে সামরিক বাহিনী সত্য প্রকাশের গতি নিয়ন্ত্রন করতে চায়। তবে সকলকে মনে রাখতে হবে, সঠিক তথ্যের অভাবই সকল অনুমাননির্ভর খবরের জননী।
মেজর জেনারেল সারওয়ার হোসেন বলেন, পাবর্ত্য চট্রগ্রাম অঞ্চলে সেনাবাহিনী আইন শৃখলা রক্ষায় যে কাজ করছে গনমাধ্যম এর উপর আরো অধিক ভূমিক রাখতে পারে। কয়েক দশক ধরে সেনাবাহিনী এখানে অনেক ত্যাগের বিনময়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। অথচ গণমাধ্যমে তার তেমন প্রতিফলন নেই। ফলে জনগন সেনাবাহিনীর ভূমিকা সর্ম্পকে জানতে পারছেনা।
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ফারজানা ব্রাউনিয়া বলেন,সেনাবাহিনী কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের সেবায় দিনরাত যে অক্লান্ত পরিশ্রম করছে গণমাধ্যমে তার প্রতিফলন নেই। সামরিক বাহিনী গণমাধ্যমের প্রভাব সর্ম্পকে তেমন ধারণা রাখেনা আবার অন্য দিকে গনমাধ্যম ও দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তাদের অবদান তুলে ধরতে ব্যর্থ হচ্ছে।এটাই সামরিক বাহিনী ও গনমাধ্যম সর্ম্পকের বড় চ্যালেঞ্জ।
ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ারদী সকালে সেমিনারের উদ্বোধন করেন। সেমিনারে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবি এবং দেশী বিদেশী উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বন্ধু প্রতীম দেশ সমূহের ২৮ জন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাসহ ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্সের ৮০ জন এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্সের ৩৫ জন প্রশিক্ষনার্থী কর্মকর্তা সেমিনারে অংশ নেন।