চট্টগ্রাম, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ঃ গভীর বঙ্গোপসাগরে সফলভাবে দূরপাল্লার মিসাইল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বাৎসরিক সমুদ্র মহড়া “এক্সারসাইজ সেফগার্ড-২০১৭” আজ বুধবার (৩১-০১-২০১৮) সমাপ্ত হয়েছে। এতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবঃ) তারিক আহমেদ সিদ্দিক (Major General (Retd.)Tarique Ahmed Siddique) প্রধান অতিথি হিসেবে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বঙ্গবন্ধু’ থেকে সমাপনী দিনের বিভিন্ন মহড়া প্রত্যক্ষ করেন। এসময় অন্যান্য উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিবর্গের সাথে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ ও (অফসরৎধষ ঘরুধসঁফফরহ অযসবফ) উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ ১৮ দিনব্যাপী আয়োজিত এ মহড়ায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর, ফ্রিগেট, করভেট, ওপিভি, মাইন সুইপার, পেট্রোলক্রাফট, মিসাইল বোটসহ বিভিন্ন ধরনের ৫০টি যুদ্ধজাহাজ, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে গঠিত বিশেষ নৌ কমান্ডো দল সোয়াডস এবং নেভাল এভিয়েশনের মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট ও হেলিকপ্টার অংশগ্রহণ করে। এছাড়া, বাংলাদেশ সেনা, বিমান বাহিনী ও কোস্টগার্ডসহ বিভিন্ন মেরিটাইম সংস্থা এ মহড়ায় অংশগ্রহণ করে। মোট তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত এ মহড়ার চূড়ান্ত দিনে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ হ’তে দূরপাল্ল¬ার মিসাইল উৎক্ষেপণ, সাবমেরিন বিধ¦ংসী গোলা নিক্ষেপ, বিমান বিধ¦ংসী কামানের গোলাবর্ষণ করাসহ নৌ যুদ্ধের বিভিন্ন কৌশল প্রদর্শিত হয়। মহড়ার প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে সমুদ্র এলাকায় নজরদারি, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান, লজিস্টিক অপারেশন, ল্যান্ডিং অপারেশন ও উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত নৌ স্থাপনাসমূহের প্রতিরক্ষা ইত্যাদি মহড়া পরিচালিত হয়। এবারের মহড়ার মূল প্রতিপাদ্য ছিল বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ সমুদ্র সম্পদের হেফাজত, মানবপাচার ও চোরাচালান রোধ, জেলেদের নিরাপত্তা বিধান, উপকূলীয় এলাকায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ইত্যাদি।
মহড়ার সফল সমাপ্তি শেষে প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের সকল কর্মকর্তা ও নাবিকদের উদ্দেশ্যে তাঁর ভাষণে সকল নৌ সদস্যকে অভিনন্দন জানান এবং তাঁদের পেশাগত মান ও কর্ম-দক্ষতার প্রশংসা করেন। প্রধান অতিথি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের কথা স¥রণ করিয়ে দেন এবং সে লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লে¬খ করেন। তিনি বলেন, ক্রমাগত সম্পদ আহরণের ফলে বিশ্বের স্থলভাগের সম্পদ সীমিত হয়ে পড়ায় সারা বিশ্বের নজর এখন সমুদ্র সম্পদের দিকে। তিনি আরও বলেন, দেশের বিশাল সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ সমুদ্র সম্পদের হেফাজতে একটি শক্তিশালী নৌবাহিনীর কোন বিকল্প নেই। আর এসকল দায়িত্ব পালনে তিনি নৌবাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সাহসিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করার আহবান জানান।
(————————–ভাষণের কপি সংযুক্ত—————————————————–)
এর আগে, প্রধান অতিথি জাহাজে এসে পৌঁছালে কমান্ডার বিএন ফ্লিট রিয়ার এডমিরাল ঐল ইহষ¡ম¥স য়খ তাঁকে স্বাগত জানান। নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল জাহাজে প্রধান অতিথিকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল আবু এসরার (Air Chief Marshal Abu Esrar) সহ উচ্চ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ, নৌ সদর দপ্তরের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারগণ, কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল, কমান্ডার বিএন ফ্লিটসহ পদস্থ নৌ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।