ঢাকা, ২১ জুন ২০১৮ঃ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২০১৮-এ ব্যাচের ৭৭৪ জন নবীন নাবিকের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ আজ বৃহস্পতিবার (২১-০৬-২০১৮) খুলনাস্থ নৌ ঘাঁটি বানৌজা তিতুমীর প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, এনবিপি, ওএসপি, বিসিজিএম, এনডিসি, পিএসসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও আকর্ষণীয় মার্চপাস্টের সালাম গ্রহণ করেন। পরে তিনি কৃতি নবীন নাবিকদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন।
নৌবাহিনীর ২০১৮-এ ব্যাচের নবীন নাবিকদের মধ্যে মোঃ আবু রায়হান, ডিই/পিএম-২/ইউটি পেশাগত ও সকল বিষয়ে সেরা চৌকস নাবিক হিসেবে ‘নৌ প্রধান পদক’ লাভ করেন। এছাড়া হাবিবুর রহমান, ডিই/ইউসি/ইউটি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে ‘কমখুল পদক’ এবং মোঃ শাহাদাত হুসাইন, ডিই/টপ-২/ইউটি তৃতীয় স্থান অধিকার করে ‘তিতুমীর পদক’ লাভ করে।
নৌপ্রধান নবীন নাবিকদের উদ্দেশ্যে তাঁর ভাষণে, মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর অসামান্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স¥রণ করেন। সেইসাথে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী বীর নৌসেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা গভীরভাবে স¥রণ করেন। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতা এবং পরবর্তীতে তার সুযোগ্য উত্তরসুরী বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশের ক্রমাগত অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ সামরিক বাহিনী, বিশেষ করে নৌবাহিনীর অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
তিনি বলেন, নৌবাহিনীকে একটি আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের সময়ে নৌবহরে যুক্ত হয়েছে সর্বোচ্চ সংখ্যক যুদ্ধজাহাজ, মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফ্ট, হেলিকপ্টার ও বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াড্স। তাছাড়া গত বছর নৌবহরে দু’টি সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এখন ত্রিমাত্রিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি পটুয়াখালীর রাবনাবাদে নৌবাহিনীর সর্ববৃহৎ নৌ-ঘাঁটি বানৌজা শের-ই-বাংলা, ঢাকার খিলক্ষেতে বানৌজা শেখ মুজিব নামে পূর্ণাঙ্গ নৌ ঘাঁটি এবং চট্টগ্রামের পেকুয়ায় একটি সাবমেরিন ঘাঁটি বানৌজা শেখ হাসিনার নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নবীন নাবিক প্রশিক্ষণ বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণের মান ও অন্যান্য সুবিধাদি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা হয়েছে। স্কুলটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য একটি মানসম্পন্ন ১০তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ভবনের নির্মাণ কাজ খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। তাছাড়া নবীন নাবিকদের প্রশিক্ষণ আরও যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত করার লক্ষ্যে সিলেবাসে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও বিভিন্ন বিষয় সংযোজন করা হয়েছে।
পরিশেষে তিনি নবীন নাবিক প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় থেকে অর্জিত জ্ঞান যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেদেরকে যোগ্য নাবিক হিসেবে গড়ে তোলা এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে এই প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও অগ্রগতির পথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান। এছাড়া পেশা হিসেবে দেশ সেবা ও দেশ গড়ার পবিত্র দায়িত্বকে বেছে নেয়ায় নৌপ্রধান নবীন নাবিকদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। নৌপ্রধান সকল নৌসদস্যকে দেশপ্রেমে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশ সেবায় একযোগে কাজ করার নির্দেশনা প্রদান করেন।
মনোজ্ঞ এ কুচকাওয়াজে অন্যান্যের মধ্যে সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (পার্সোনেল), খুলনা নৌ অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার, খুলনা ও যশোর এলাকার পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকবৃন্দ এবং নবীন নাবিকদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।