ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৩ (বৃহস্পতিবার): বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ এক্সপ্লোসিভ অর্ডন্যান্স ডিসপোজাল (ব্যানইওডি) প্লাটুন এর ৩৬ জন সদস্য কঙ্গোতে প্রথমবারের মত মোতায়েনের উদ্দেশ্যে আজ ২০ এপ্রিল ২০২৩ রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেছে। ইউনাইটেড নেশনস অর্গানাইজেশন স্টাবিলাইজেশন মিশন ইন দ্যা ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ দ্যা কঙ্গো (মনুস্কো) মিশনের এক্সপ্লোসিভ অর্ডন্যান্স ডিসপোজাল এর অংশ হিসেবে এই কন্টিনজেন্টটি অপারেশন এলাকায় জরুরি মোতায়েন করা হবে। এই কন্টিনজেন্টের মূল দায়িত্ব হবে এক্সপ্লোসিভ অর্ডন্যান্স ডিসপোজাল এর সহায়তা প্রদান করা। জাতিসংঘ সদর দপ্তরের আহবানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অত্যন্ত দ্রুততার সাথে এই কন্টিনজেন্টকে প্রস্তুত এবং অপারেশনাল এলাকায় নিয়োগের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। কেবলমাত্র মৌলিক অস্ত্র সরঞ্জামাদি নিয়ে শান্তিরক্ষী মিশনে এলাকায় স্বল্পতম সময়ে মোতায়েন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের জন্য একটি নতুন সংযোজন।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিককালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব ও আত্মত্যাগ প্রদর্শনের উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও সেনাবাহিনী প্রধানের অভিজ্ঞ দিকনির্দেশনা, সামরিক কূটনীতি এবং দক্ষ নেতৃত্বের ফলেই বিভিন্ন মিশনে বাংলাদেশের জনবল এবং সক্ষমতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে চিফ অব স্টাফ, বিভিন্ন মিশনে ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার ও সেক্টর কমান্ডার পদে দায়িত্ব পালনসহ মিশনের নেতৃস্থানীয় পদে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীগণের পদায়নও বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত তিন দশকে বাংলাদেশের গর্বিত শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের ৪০টি দেশে ৫৬টি শান্তিরক্ষা মিশন সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। এ সকল দুঃসাহসিক অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১,৫১,৯৩০ জন সদস্য বিশ্ব শান্তিরক্ষায় প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। এই মহান দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৩১ জন সদস্য নিহত এবং ২৩২ জন সদস্য আহত হন। বর্তমানে জাতিসংঘের ৯টি দেশের ১০টি মিশনে সর্বমোট ৬,০০৯ জন সেনাসদস্য কর্মরত রয়েছেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীগণের এই অর্জনের পেছনে রয়েছে আন্তরিকতা, নিরলস পরিশ্রম, উন্নত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম, শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা ও মহান আত্মত্যাগ। উন্নত পেশাদারিত্ব ও ক্রমাগত সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দেশের পতাকা সমুন্নত এবং দেশের জন্য অর্জিত সম্মান ও গৌরব বজায় রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ।
ISPR Press Release – UN peacekeeping mission