ঢাকা, ১৮ জুন ২০২০ঃ বাংলাদেশের জলসীমা সুরক্ষায় নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নৌবহরে সংযোজিত হলো নতুন করভেট ক্লাস যুদ্ধজাহাজ ‘সংগ্রাম’। উদ্ভুত করোনা পরিস্থিতির কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আজ বৃহস্পতিবার (১৮-০৬-২০২০) জাহাজটির কমিশনিং করেন। জাহাজটি আগামী ০৯ জুলাই ২০২০ তারিখে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে লেবাননের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।
লেবাননের ভূ-মধ্যসাগরে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে উপমহাদেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিশ্বশান্তির দূত হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে। নতুন এযুদ্ধজাহাজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের সমুদ্রসীমা পেরিয়ে বিশ¡শান্তি প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।এর আগে চট্টগ্রাম নৌ জেটিতে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে জাহাজের অধিনায়ক ক্যাপ্টেন এফ এম আরিফুর রহমান ভূঁইয়া এর হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দেন এবং নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে নামফলক উন্মোচন করেন। এর মধ্য দিয়ে যুদ্ধজাহাজটি নৌবাহিনীতে আনুষ্ঠানিকভাবে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করল।
কমিশনিং অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে উপস্থিত উর্দ্ধতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এর উপস্থিতিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি আধুনিক শক্তিশালী ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে রুপান্তরে বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রয়াসের কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষা ও দূর্যোগ মোকাবেলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে আধুনিক নৌবাহিনী গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তাতিনি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সদ্য সংযোজিত নৌবাহিনী যুদ্ধজাহাজ ‘সংগ্রাম’ নৌবহরে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, নতুন এ যুদ্ধজাহাজ দেশের জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি বিশ¡ শান্তিরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি ও আম্ফানসহ বিভিন্ন জাতীয় দূর্যোগে নৌবাহিনীর অংশগ্রহণসহ নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি ও উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ গুরুত্বসহকারে তুলে ধরেন।…………… (ভাষণেরকপি সংযুক্ত)………………
সদ্য সংযোজিত ৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১১ মিটার প্রস্থের এই জাহাজটি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ২৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম। জাহাজটি আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কামান, ভূমি থেকে আকাশে ও ভূমি থেকে ভূমিতে উৎক্ষেপনযোগ্য মিসাইল, অত্যাধুনিক ত্রিমাত্রিক র্যাডার, ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম, র্যাডার জ্যামিং সিস্টেমসহ বিভিন ধরণের যুদ্ধ সরঞ্জামাদিতে সুসজ্জিত। এছাড়া, জাহাজটিতে হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়নের সুবিধাদি রয়েছে।
কমিশনিং অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম নৌ জেটিতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সামরিক ও বেসামরিক উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল ২০১৯ জাহাজটি চীনের সাংহাই বন্দর হতে বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়।