ঢাকা, ১২ এপ্রিল ২০২১: বঙ্গবন্ধু সেনানিবাসে আজ সোমবার (১২-4-2০২১) বহুজাতিক সামরিক অনুশীলন ‘শান্তির অগ্রসেনা’ এর সমাপনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও টেলি কনফারেন্সের (ভিটিসি) মাধ্যমে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুশীলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশত বার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর শান্তি দর্শনকে সমুন্নত করে এই বহু জাতিক অনুশীলনটি আয়োজন করা হয়। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের শান্তিরক্ষীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ছিল এই অনুশীলনের মূল উদ্দেশ্য ।এই অনুশীলনে সামরিক অপারেশন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের আলোচনা ও বিভিন্ন প্রকার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত অত্যাধুনিক অস্ত্র-সরঞ্জামাদি ও মিলিটারি গেজেটসমূহ সমরাস্ত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে সকলের সামনে উপস্থাপন করা হয়।
এছাড়াও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নারী সদস্যদের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। উল্লেখ্য বহুজাতিক এই সামরিক অনুশীলনে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলংকা হতে ৩০ জন করে এবং ভুটান হতে ৩৩ জনসহ মোট ১২৩ জন সেনাসদস্য অংশগ্রহণ করেন। অনুশীলনে আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, নেপাল, তুরস্ক, সৌদি আরব, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানের মোট ১২জন পর্যবেক্ষক। প্রধান অতিথি ছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এবং ভারতের সেনাপ্রধানগণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সার্টিফিকেট বিতরণ করেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার সমাপনী বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেই সাথে তিনি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী লাখো শহীদদের এবং সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা একটি স্বাধীনদেশ পেয়েছি । তিনি বলেন, চলমান বিশ্বে প্রযুক্তির প্রসার ও অগ্রযাত্রার সাথে সাথে রাষ্ট্রীয় এবং অরাষ্ট্রীয় শক্তিসমূহ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় নতুন মাত্রার চ্যালেঞ্জ হিসেবে উপস্থিত হয়েছে । এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শান্তিরক্ষীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণও সরঞ্জামাদি দিয়ে প্রস্তুত করার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী । ভবিষ্যৎ শান্তিরক্ষীদের জন্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসমূহে বর্তমানে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বাস্তবমুখী এই অনুশীলন বিশেষ সহায়ক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন ।বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিসসাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং (বিপসট) প্রতিষ্ঠানটি দেশ-বিদেশের অসংখ্য শান্তিরক্ষীদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে বলে তিনি জানান। প্রবল উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে ঐকান্তিকভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুশীলন ‘শান্তির অগ্রসেনা’ কে সাফল্য মন্ডিত করে তোলায় সকল বন্ধুপ্রতিম দেশের অংশগ্রহণকারীদের তিনি আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশত বার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে সফলভাবে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদকে ধন্যবাদ জানান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। সেই সাথে দেশি এবং বিদেশি সকল বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দের প্রতি তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পরিশেষে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে ‘অনুশীলন শান্তির অগ্রসেনা’ এর সমাপ্তি ঘোষণা করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী । তিনি আরো বলেন, —————– (ভাষণের কপি সংযুক্ত)————————————————–।
সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান, ডেপুটি চিফ অপারেশন – ভুটান সেনাবাহিনী, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, মালি এবং দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত ফোর্স কমান্ডারগণ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ, বাংলাদেশ সেনা বাহিনী প্রধান, বিভিন্ন দেশের ডিফেন্স এ্যাটাশে/সামরিক এডভাইজার ও পর্যবেক্ষকবৃন্দসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং অনুশীলনে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের সদস্যগণ।