ঢাকা, ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ঃ টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলায় সেনাবাহিনীর শীতকালীন বহিরঙ্গণ অনুশীলনের চূড়ান্ত মহড়া আজ বৃহস্পতিবার (০৫-১-২০২৩) অবলোকন করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি (বার), ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি। চূড়ান্ত মহড়ার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ০৩ সপ্তাহব্যাপী পরিচালিত শীতকালীন প্রশিক্ষণ ২০২২-২০২৩ ‘অনুশীলন নবউদ্যোগ’। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯ পদাতিক ডিভিশন সফলভাবে এই অনুশীলন পরিচালনা করে।
এই অনুশীলনে সাঁজোয়া বহর, এপিসি এর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ছত্রীসেনা অংশগ্রহণ করে। সেনাবাহিনীর আর্মি এভিয়েশনের হেলিকপ্টার ব্যবহার করে আর্মি কমান্ডো সন্নিবেশ, ইঞ্জিনিয়ার্স কর্তৃক প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং পদাতিক ও অন্যান্য কোরের সমন্বয়ে শত্রু অবস্থানের উপর আক্রমণ পরিচালনা করা হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান, এসবিপি, এসজিপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, পিএইচডি; সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, এসজিপি, পিএসসি; কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ সাইফুল আলম, এসবিপি, ওএসপি, এসইউপি, এডব্লিউসি, পিএসসি, পিএইচডি এবং জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) আর্মি ট্রেনিং এন্ড ডকট্রিন কমান্ড লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহম্মদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, এসবিপি, বিএসপি, এনডিসি, পিএসসি, এমফিলসহ সেনাসদরের প্রিন্সিপাল ষ্টাফ অফিসারবৃন্দ, অন্যান্য জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, ডিফেন্স জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সাংবাদিকবৃন্দ এবং অন্যান্য গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে শীতকালীন প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে সেনাসদর ও সেনাবাহিনীর সকল ফরমেশন পূর্ণাঙ্গর্রপে নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় মোতায়েন হয়। জাতির গর্ব ও আস্থার প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীতকালীন প্রশিক্ষণের প্রতিপাদ্য হলো “যুদ্ধ পারঙ্গমাতা, যুদ্ধোপযোগিতা ও রনপ্রস্তুতি প্রদর্শন’। দেশ সেবায় নিজেদের প্রস্তুত করে তুলতে সরেজমিনে বাস্তবধর্মী বিভিন্ন সামরিক বিষয়াদি অনুশীলনের মাধ্যমে পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়ন সাধন করাই এই অনুশীলনের মূল লক্ষ্য। এছাড়া এ বছর শীতকালীন বহিরঙ্গণ অনুশীলনটিতে অধিকতর বাস্তবধর্মী ও অভিনব জ্ঞানের প্রতিফলন ঘটানো হয়। সেনাবাহিনী প্রধানের নতুন কৌশলের উদ্ভাবন, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিভিন্ন প্যারা মিলিটারি ফোর্সের সমন্বয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য এই অনুশীলনের পরিকল্পনা করা হয়। সব মিলিয়ে সেনাবাহিনীর এবারের শীতকালীন প্রশিক্ষণ ছিল অনেক অভিনব ও বাস্তবধর্মী। সেনাবাহিনীর সকল সদস্য ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে এই শীতকালীন অনুশীলনে অংশগ্রহণ করে।
প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও শীতকালীন প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ফরমেশনসমূহ স্ব-স্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় অসহায় ও দুস্থ শীতার্ত মানুষদের মাঝে শীতবস্ত্র ও ত্রাণ বিতরণ, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ঔষধ বিতরণসহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজ করছে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় গবাদিপ্রাণীর বিনামূল্যে চিকিৎসা, পরামর্শ প্রদান ও ঔষধ বিতরণ করছে। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রেই জনগণের পাশে দাঁড়ায় সেনাবাহিনী। বাস্তব সম্মত ও যুগোপযুগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে একটি বিশ্ব মানের বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান সেনাবাহিনী প্রধান।