চট্টগ্রাম, ৩১ মে ২০১৭ ঃ গতকাল মঙ্গলবার ৩০ মে ২০১৭ দুপুরে ঘুর্ণিঝড় “মোরা’ সেন্টমার্টিন-কক্সবাজার হয়ে চট্টগ্রাম অতিক্রম করে। এতে সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার, টেকনাফ, কুতুবদিয়াসহ উপকূলীয় অঞ্চল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ঝড়ের পরপরই বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে নৌবাহিনীর ১৫টি জাহাজ, ১টি হেলিকপ্টার ও ১টি টহল বিমান কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন্স, টেকনাফ, চট্টগ্রাম ও খুলনার উপকূলীয় অঞ্চলসহ গভীর সমুদ্রে ব্যাপক তল্লাশী কার্যক্রম শুরু করেছে। ৫টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে নৌবাহিনীর জাহাজসমূহ বাংলাদেশের পুরো সমুদ্রসীমায় একযোগে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে। এদের মধ্যে, ১ম গ্রুপে চট্টগ্রাম বহিঃনোঙ্গর ও তদসংলগ্ন এলাকায় নৌবাহিনী জাহাজ ‘অপারেজয়’, ‘অতন্দ্র’ ও ‘অদম্য’ উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। ২য় গ্রুপে কুতুবদিয়া ও তদসংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ‘মধুমতি’, ‘শাপলা’ ও ‘সুরভি’। কক্সবাজার ও তদসংলগ্ন এলাকায় ৩য় গ্রুপে রয়েছে নৌবাহিনী জাহাজ ‘সাঙ্গু’, ‘দূর্জয়’ ও ‘কে জে আলী’। ৪র্থ গ্রুপে সুন্দর বনের ফেয়ারওয়ে বয়া ও তদসংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ‘ধলেশ¡রী’ ও ‘স্বাধীনতা’। এয়াড়া, ৫ম গ্রুপে গভীর সমুদ্রে রয়েছে ‘আবু বকর, ‘ওসমান’, ‘বিজয়’ ও ‘সমুদ্র অভিযান’। আকাশ হতে জেলেদের খুঁজে বের করার কাজে নিয়োজিত রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১টি হেলিকপ্টার ও ১টি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট। এছাড়া কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন্স ও তৎসংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য নৌবাহিনীর একাধিক কন্টিনজেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে যারা ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণসহায়তাসহ নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
২০ জেলেকে জীবিত উদ্ধারঃ ঝড়ের পরপরই গতকাল ৩০ মে ২০১৭ নৌবাহিনী জাহাজ সমুদ্র অভিযান ও খাদেম জরুরী উদ্ধার অভিযানে কুতুবদিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। উদ্ধার অভিযানকালে বানৌজা খাদেম কুতুবদিয়ার নিকট গভীর সমুদ্রে বিকল হওয়া ডুবন্ত নৌকা হতে ২০ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাবার প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে তারা সবাই সুস্থ আছেন।
সেন্টমার্টিন্স ও কুতুবদিয়ায় ত্রাণ এবং চিকিৎসা সেবা প্রদানঃ ঘুর্ণিঝড় মোরার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ সেন্টমার্টিন ও কুতুবদিয়ার দুর্গত এলাকায় সকাল থেকে ত্রাণ বিতরণ করেছে নৌবাহিনী জাহাজ সমুদ্র অভিযান ও খাদেম। জরুরী ত্রাণ সহায়তার মধ্যে রয়েছে ৫ টন চাল, ২ টন ডাল, ৩ টন মুড়ি, ৮ টন চিড়া, ২ টন গুড়, ৩ হাজার পিস মোমবাতি, ৩শ কেজি পলিথিন ব্যাগ, ১শ প্যাকেট ম্যাচ বক্স ও ২০ টন বিশুদ্ধ খাবার পানি। এছাড়া, দুর্গত এলাকায় জরুরী চিকিৎসা সহায়তার জন্য ২৩ সদস্যের দুটি বিশেষ মেডিকেল টিম কাজ করছে। তারা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, জীবন রক্ষাকারী ঔষধ ও খাবার স্যালাইন বিতরণের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। সকাল থেকে সেন্টমার্টিনের নৌ কন্টিনজেন্টে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এই উদ্ধার অভিযান, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান কার্যক্রম দুর্যোগ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
বঙ্গোপসাগরে ঝড়ে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে উপকূলীয় অঞ্চলে উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণে কাজ করছে নৌবাহিনীর ১৫টি জাহাজ, হেলিকপ্টার ও টহল বিমান কুতুবদিয়ার নিকট হতে ২০ জেলেকে জীবিত উদ্ধার
২১৫