ঢাকা, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ঃ বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে মিডশিপম্যান ২০২২এ ব্যাচ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২৪বি ব্যাচের শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ আজ রবিবার (২৩-১২-২০২৪) অনুষ্ঠিত হয়েছে। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। উক্ত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২০২২এ ব্যাচের ৩৪ জন মিডশিপম্যান এবং ২০২৪বি ব্যাচের ০৮জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ মোট ৪২ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন। উল্লেখ্য, নৌবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে ০৭ জন নারী কর্মকর্তা রয়েছেন।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান বিভিন্ন বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী কৃতি প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে পদক তুলে দেন। সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের মধ্যে মিডশিপম্যান ২০২২এ ব্যাচের মিডশিপম্যান তৌহিদুর রহমান জয়, (এক্স), বিএন সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী সেরা চৌকশ মিডশিপম্যান হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন। এছাড়া মিডশিপম্যান নাসিফ আলভী হক, (এক্স), বিএন প্রশিক্ষণে ২য় সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী হিসেবে ‘নৌ প্রধান স্বর্ণপদক’ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২৪বি ব্যাচের এ্যাক্টিং লেফটেন্যান্ট মোঃ হাসনাত উল্লাহ, (শিক্ষা), বিএন শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জনকারী হিসেবে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক’ লাভ করেন। পরে সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাগণ আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করেন।
সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে নৌবাহিনী প্রধান তাঁর ভাষণের শুরুতে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নৌ কমান্ডোদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। সেই সাথে স্মরণ করেন জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শাহাদাত বরণকারী সকল শহিদকে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী দেশের আশা-আকাঙ্খার প্রতীক। দেশের সমুদ্রসীমা ও সমুদ্র সম্পদের সুরক্ষা এবং মেরিটাইম ইকোনমির বিস্তৃতিতে নৌবাহিনী অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। বর্তমান সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধন ও প্রশিক্ষিত জনবল তৈরির মাধ্যমে কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। নৌবাহিনী পরিচালিত শিপইয়ার্ডগুলোতে দেশীয় প্রযুক্তিতে জাহাজ নির্মাণে সক্ষমতা অর্জন করায় দেশের অর্থনীতির চাকা গতিশীল হওয়ার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে এবং বাংলাদেশ Ship Builder Nation হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি লাভ করেছে। দেশের সমুদ্রসীমায় অবৈধ, অনিবন্ধিত ও অনিয়ন্ত্রিত ফিশিং প্রতিরোধের মাধ্যমে মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধি লাভ করছে। সাম্প্রতিককালে অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান, বন্যায় নৌবাহিনীর গৃহীত পদক্ষেপ ও বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রম এবং সমুদ্রগামী ওয়েল ট্যাংকারে ঘটে যাওয়া অগ্নি নির্বাপণে নৌবাহিনীর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।
নৌবাহিনী প্রধান বলেন, নবীন কর্মকর্তারা ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে একাডেমির প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও অগ্রগতির পথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে। দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ ও ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের পেশাগত উৎকর্ষ ও আধুনিক প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জনের নির্দেশনা দেন। তিনি পেশা হিসেবে দেশ সেবার এ পবিত্র দায়িত্বকে বেছে নেওয়ায় নবীন কর্মকর্তা ও তাদের অভিভাবকবৃন্দকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।