ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০১৯ ঃ-বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ২১৪ মেইন্টেন্যান্স, রিপেয়ারিং ও ওভারহলিং (MRO) ইউনিট এর সফল কার্যক্রমের স্বীকৃতি স্বরচপ এই ইউনিটকে চীনের জিলিন এয়ারক্রাফট মেইন্টেন্যান্স কোম্পানী লিঃ কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত (Authorized) ওভারহল ইউনিট হিসেবে সনদপত্র প্রদান অনুষ্ঠান ২৩ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুতে অনুষ্ঠিত হয়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবঃ) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, আরসিডিএস, পিএসসি উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
পূর্বে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যুদ্ধ বিমান ওভারহল এর কোন ফ্যাক্টরী ছিলনা যার জন্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর চীনের তৈরী বিমানগুলোকে ওভারহলিং এর জন্য সুদূর চীনে পাঠাতে হতো। এতে করে একদিকে যেমন অনেক সময়ের প্রয়োজন হতো তেমনিভাবে প্রয়োজন হতো প্রচুর অর্থের। এখন দেশে ওভারহলিং এর মাধ্যমে সময় ক্ষেপন রোধের পাশাপাশি প্রচুর পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব হচ্ছে। অপারেশনাল সক্ষমতার ক্ষেত্রেও এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। ২১৪ এমআরও ইউনিট এর এই সফলতাকে বিবেচনায় নিয়ে কারিগরি সহায়তা প্রদানকারী চীনের জিলিন এয়ারক্রাফট মেইন্টেন্যান্স কোম্পানী লিঃ ২১৪ এমআরও ইউনিটকে স্বীকৃতিস্বরূপ (Authorized) ওভারহল ইউনিট হিসেবে এই সনদপত্র প্রদান করে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে গত ০৪ ডিসেম্বর ২০১১ সালে স্থাপিত হয় বঙ্গবন্ধু এ্যারোনটিক্যাল সেন্টার (BAC)। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে এই বঙ্গবন্ধু এ্যারোনটিক্যাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়। বঙ্গবন্ধু এ্যারোনটিক্যাল সেন্টারের অর্ন্তগত ২১৪ এমআরও ইউনিটও একই সাথে কার্যক্রম শুরচ করে। চীনের প্রস্ত্ততকারী প্রতিষ্ঠানের (OEM) সার্বিক তত্ত্বাবধানে জিলিন এয়ারক্রাফট মেইন্টেন্যান্স কোম্পানী লিমিটেড এর সার্বিক সহযোগিতায় অত্র ইউনিট প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বিমান বাহিনীর প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানগণ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে বিমান ওভারহল করতে সক্ষম। বিমান বাহিনীর নিজস্ব টেকনিশিয়ান কর্তৃক সফলভাবে ওভারহল করে প্রথম বিমানটি হস্তান্তর করা হয় ২০১৮ সালের ০৩ সেপ্টেম্বর। বর্তমানে আরো ০৩ টি বিমান, বিমান বাহিনীর নিজস্ব টেকনিশিয়ান কর্তৃক ওভারহল কার্যক্রমের আওতায় রয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তার ভাষণে ২১৪ এমআরও ইউনিটকে সনদপত্র অর্জনের জন্য অভিনন্দন জানান। সহযোগিতার জন্য তিনি চীন সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এছাড়াও তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নপূরণে এই ২১৪ এমআরও ইউনিট ভবিষ্যতে বিমান প্রস্ত্তত করতে সক্ষম হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বিবিপি, ওএসপি, এনডিসি, পিএসসি ২১৪ এমআরওইউ ওভারহলিং ইউনিট হিসেবে সনদপত্র পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং সেই সাথে ভবিষ্যতে বিমান বাহিনীর অপারেশনাল কার্যক্রম আরও ত্বরান্বিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত সেনা ও নৌবাহিনী প্রধান, সাবেক বিমান বাহিনী প্রধানগণ, বিমান বাহিনীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ, চীনা দূতাবাসের প্রতিনিধিগণ এবং অন্যান্য সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।