ঢাকা, ৩১ মার্চ ঃ- বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৪৪তম বার্ষিক কমান্ড সেফটি সেমিনার ফ্যালকন হল, ঢাকা সেনানিবাসে বুধবার (৩১-০৩-২০২১) অনুষ্ঠিত হয়।
বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বিবিপি, ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি ভিটিসির মাধ্যমে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিমান বাহিনী প্রধান তার বক্তব্যে কোভিড-১৯ মহামারী অবস্থা থাকা সত্ত্বেও ২০২০ সালে ২৮,০০০ (আটাশ হাজার) নিরাপদ উড্ডয়ন ঘন্টা অর্জন করায় মহান আল্লাহ্র শুকরিয়া জ্ঞাপন ও বিমান বাহিনী সদস্যদের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ২০২০ সাল ছিল বিমান বাহিনীর জন্য একটি ঘটনা বহুল বছর। বিমান বাহিনী বিভিন্ন “অপারেশনাল উড্ডয়নের” পাশাপাশি কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মিশন, যেমন চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে চিকিৎসা সামগ্রী আনয়ন, মালদ্বীপ ও লেবাননে চিকিৎসা সামগ্রী পরিবহন, আটকে পড়া বাংলাদেশীদের যুক্তরাজ্য ও মালদ্বীপ হতে বাংলাদেশে আনা ইত্যাদি অত্যন্ত সফলভাবে পরিচালনা করে। এজন্য তিনি বিমান বাহিনী সদস্যদের কর্মদক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বিমান বাহিনী প্রধান উল্লেখ করেন যে, প্ূের্ব ঘটিত ঘটনাসমূহ থেকে শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমেই বিভিন্ন দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ ও “সুরক্ষা সংস্কৃতি” বিকাশ সম্ভব। এ বিষয়ে তিনি ২০২০ সালে সাইবেরিয়া ও আলাস্কা হয়ে সুদূর কানাডায় বিমান বাহিনীর সি-১৩০বি বিমানের পরিচালনাকে একটি মূল্যবান অভিজ্ঞতা বলে উল্লেখ করেন। “সম্মিলিত প্রয়াস” নিরাপদ উড্ডয়নের চাবিকাঠি। এটা এয়ার ক্রু, টেকনিশিয়ান, বিমান নিয়ন্ত্রক থেকে শুরু করে বিমান উৎপাদক, ওভারহলিং ও রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থাকেও অন্তর্ভুক্ত করে। আমাদের সকলকেই আরো বেশী সতর্ক ও সূক্ষ পর্যবেক্ষণের অধিকারী হতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট সকল নিয়মনীতি কঠোর ভাবে মেনে চলতে হবে।
তিনি বলেন যে, বিমান বাহিনী সার্বিকভাবে এ্যানালগ ব্যবস্থা থেকে ডিজিটাল ব্যবস্থায় উত্তরণ করছে। তাই উড্ডয়ন নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আপোষহীন মান অর্জনের লক্ষ্যে সর্বস্তরের জনবলের মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ প্রদানের উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন । তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক দুর্ঘটনার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। এই কারণ সমূহ উদঘাটন করে এবং অতীত ঘটনা সমূহ হতে শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলার ব্যপারেও পরামর্শ প্রদান করেন।
তিনি অক্টোবর ২০২১ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য “৭ম আন্তর্জাতিক উড্ডয়ন নিরাপত্তা সেমিনার” সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাযথ ভাবে প্রস্তুতি নিতে আহ্বান জানান। এছাড়াও, তিনি ৪৪তম কমান্ড সেফটি সেমিনারের মাধ্যমে বিমান বাহিনীর সদস্যদের পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে উড্ডয়ন নিরাপত্তার মান উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার জন্য সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
২০২০ সালে সর্বাধিক নিরাপদ উড্ডয়ন ঘন্টা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীর শ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ’আন্তঃঘাঁটি ফ্লাইট সেফটি ট্রফি’ এবং ১১ নং বহর’ আন্তঃস্কোয়াড্রন খাদেমুল বাশার ফ্লাইট সেফটি ট্রফি’ লাভ করে। অনুষ্ঠানে বিমান সদর ও বিমান বাহিনীর ঘাঁটি বাশার এবং ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিমানসেনাগণ উপস্থিত ছিলেন। বিমান বাহিনীর অন্যান্য ঘাঁটি সমূহের সদস্যগণ ভিডিও টেলিকনফারেন্স এর মাধ্যমে উক্ত অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।