ঢাকা, ১০ জুলাই ২০১৯ ঃ যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, বিএসপি, বিজিবিএম, পিবিজিএম, বিজিবিএমএস, পিএসসি, জি গত ০৮ ও ০৯ জুলাই ২০১৯ তারিখে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে পৌঁছালে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি জনাব মাসুদ বিন মোমেন সেনাবাহিনী প্রধানকে স্বাগত জানান। পরবর্তীতে তিনি সেনাবাহিনী প্রধানকে বাংলাদেশ মিশনের কর্মপরিধি সম্পর্কে অবহিত করেন এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাঁদের পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন।
এরপর, সেনাবাহিনী প্রধান সেক্রেটারি জেনারেল-এর সামরিক উপদেষ্টা (MILAD) লেফটেন্যান্ট জেনারেল কর্লোস উমবার্তো লতে (Carlos Humberto Loitey) এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সামরিক উপদেষ্টা বিভিন্ন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব ও মানবিক কর্মকান্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এছাড়াও তিনি বিশ¡শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের স্বতঃস্ফুর্ত সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেনাবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ থেকে একজন ফোর্স কমান্ডার নিয়োগের ব্যাপারে প্রস্তাবনা দেন। সামরিক উপদেষ্টা অতি শীঘ্রই বাংলাদেশ থেকে একজন ফোর্স কমান্ডার নিয়োগের ব্যাপারে আশ¡াস প্রদান করেন। এছাড়াও, সেনাবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ থেকে অতিরিক্ত ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল, স্পেশাল ফোর্স এবং র্যাপিডলি ডেপ্লয়েবল ব্যাটালিয়ান মোতায়েনেরও প্রস্তাবনা দেন।
এ সময় সামরিক উপদেষ্টা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানকে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে একজন কর্নেল পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে শান্তিরক্ষা মিশনের ফোর্স জেনারেশন প্রধান হিসেবে নিয়োগপত্র হস্তান্তর করেন। বাংলাদেশের ৩১ বছর শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণে প্রথম এই গুরুত্বপূর্ণ পদে বাংলাদেশকে নির্বাচন করা হলো। পাশাপাশি সামরিক উপদেষ্টা রোহিঙ্গা নাগরিকদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশাংসা করেন।
এরপর সেনাবাহিনী প্রধান অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ডিপার্টমেন্ট অফ অপারেশনাল সাপোর্ট মিস লিসা এম বাটেনহেইম (Ms. Lisa M. Buttenheim) এর সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে সেনাবাহিনী প্রধান জাতিসংঘ সদর দপ্তরের কাছে বাংলাদেশ সরকারের প্রাপ্ত ৬০ মিলিয়ন ডলার (আনুমানিক ৫০০ কোটি টাকা) পরিশোধের অনুরোধ করেন। সেনাবাহিনী প্রধানের অনুরোধের প্রেক্ষিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল তৎক্ষণাৎ আড়াইশো কোটি টাকা পরিশোধের অঙ্গীকার করেন এবং অবশিষ্ট অর্থ স্বল্প সময়ের মধ্যে পরিশোধের আশ¡াস দেন। অতঃপর সেনাবাহিনী প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, পিস অপারেশনস মিস্টার জন পিয়েরে ল্যাক্রয় (Mr Jean-Pierre Lacroix) এর সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে সেনাবাহিনী প্রধান ফরাসি ভাষাভাষী দেশগুলোতে বাংলাদেশের সেনা মোতায়েনের জন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতা অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টা সম্পর্কে অবহিত করেন। বিশেষ করে চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে বিশে¡র যে কোন প্রান্তে সেনা প্রেরণে বাংলাদেশের তাৎক্ষনিক প্রস্তুতির ব্যাপারেও সেনাবাহিনী প্রধান তাঁদের অবহিত করেন। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দ্বিতীয় বৃহত্তম সৈন্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ¡শান্তিরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সেনাবাহিনী প্রধানের এই পরিদর্শন জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।