ঢাকা, ২১ নভেম্বরঃ ২১শে নভেম্বর ২০১৬ (সোমবার) যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদ্যাপিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচির শুরুতে দেশের সকল সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মোঃ আবদুল হামিদ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পু¯পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে পৃথক পৃথকভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করে। পু¯পস্তবক অর্পণকালে শহীদদের স্মরণে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। পু¯পস্তবক অর্পণ শেষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
এর আগে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে এসে পৌঁছলে তাঁদেরকে স্বাগত জানান তিন বাহিনী প্রধানগণ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার।
মুক্তিযুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মরণে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল আবু এসরার নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে সম্মিলিতভাবে শিখা অনির্বাণে পু¯পস্তবক অর্পণ করেন।
শিখা অনির্বাণে পু¯পস্তবক অর্পণের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে গমন করেন। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ মাহফুজুর রহমান এবং মহাপরিচালকবৃন্দ। সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান ও বিমান বাহিনী প্রধান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। পরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্ধারিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করেন। তিনি তাদের হাতে সম্মানী চেক এবং উপহার হিসেবে শাল ও মোবাইল ট্যাব তুলে দেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর ২০ জন খেতাবপ্রাপ্ত জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ পরিচয়পত্র বিতরণ করেন । কার্ডটির সাহায্যে তাঁরা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়াও ২০১৫-২০১৬ সালে সশস্ত্র বাহিনীর শান্তিকালীন সেনা ০১ জন ও বিমান বাহিনী ০২ জন সদস্যদের বাহিনী পদক এবং অসামান্য সেবা পদকপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ০১ জন ও নৌবাহিনীর ০১ জন সদস্যসহ মোট ০৫ জনকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পদকে ভূষিত করা হয়। সংবর্ধনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ————————(ভাষণের কপি সংযুক্ত———————————————-)।
এর পরে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান ও বিমান বাহিনী প্রধান বঙ্গভবনে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।
০৭ জন বীরশ্রেষ্ঠের নিকট আত্মীয়সহ প্রায় ৭০ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীগণ সংবর্ধনায় যোগ দেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবঃ) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন ও প্রেস সচিব জনাব ইহসানুল করিম, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব এম.এ হান্নানসহ উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সাথে চা চক্রে মিলিত হন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আগামী ২২ নভেম্বর সেনাবাহিনী প্রধান ও বিমান বাহিনী প্রধান নিজ নিজ বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করবেন। এছাড়া নৌবাহিনী প্রধান আজ (২১ নভেম্বর) নিজ বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা/তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করবেন।
আজ বিকেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ হতে সেনাকুঞ্জে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে