চট্টগ্রাম, ২৭ এপ্রিল ২০১৯ঃ গণচীনে তৈরীকৃত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নতুন দুটি যুদ্ধজাহাজ ‘সংগ্রাম’ ও ‘প্রত্যাশা’ আজ শনিবার (২৭-০৪-২০১৯) চট্টগ্রাম নেভাল জেটিতে এসে পৌঁছায়। এসময় কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল রিয়ার এডমিরাল আবু আশরাফ, বিএসপি, এনসিসি, পিএসসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জাহাজ দুটিকে স্বাগত জানান। জাহাজ দুটি আগমন উপলক্ষে নেভাল জেটিতে নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিপুল সংখ্যক নাবিক উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য নবনির্মিত জাহাজ বানৌজা সংগ্রাম ও বানৌজা প্রত্যাশা এর প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৯০ মিটার এবং প্রস্থ ১১ মিটার। জাহাজ দুটি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ২৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম। শত্রু বিমান, জাহাজ এবং স্থাপনায় আঘাত হানতে সক্ষম জাহাজ দুটি আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কামান, ভূমি থেকে আকাশে এবং ভূমি থেকে ভূমিতে উৎক্ষেপনযোগ্য মিসাইল, অত্যাধুনিক থ্রিডি র্যাডার, ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম, র্যাডার জ্যামিং সিস্টেমসহ বিভিন্ন ধরণের যুদ্ধ সরঞ্জামাদিতে সুসজ্জিত। জাহাজ দুটিতে হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য ডেক ল্যান্ডিং সহ অন্যান্য সুবিধাদি রয়েছে। গভীর সমুদ্রে দীর্ঘ সময়ব্যাপী মোতায়নযোগ্য এ জাহাজ দুটির মাধ্যমে বিশাল সমুদ্র এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান ও জলদস্যূতা রোধ, সমুদ্রে উদ্ধার তৎপরতা, সুনীল অর্থনীতির বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনাসহ মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার পাশাপাশি তেল, গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বরাদ্দকৃত ব্লকসমূহের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে বহুমূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তারই অংশ হিসেবে নৌবহরে যুক্ত হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি ও যুদ্ধ সরঞ্জামে সজ্জিত আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন, হেলিকপ্টার ও মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট। নৌবহরের সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে নৌবাহিনীর জাহাজ ‘সংগ্রাম’ ও ‘প্রত্যাশা’ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য গণচীনে নির্মিত দুটি করভেট নির্মাণের লক্ষ্যে চীনের শীপ বিল্ডিং এন্ড অফশোর ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেড এর সাথে গত ২৯ সেপ্টে¤¦র ২০১৫ তারিখে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। গত ০৯ আগস্ট ২০১৬ তারিখে জাহাজ দুটির স্টীল কাটিং এর মাধ্যমে নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং গত ২৮ মার্চ ২০১৯ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। জাহাজ দুটি গত ১২ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে চীনের সাংহাই বন্দর হতে যাত্রা শুরু করে চীনের ইয়ানতিয়ান বন্দর এবং মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দর হয়ে প্রায় ৮,০০০ কিলোমিটার সমুদ্র পথ অতিক্রম করে ২৭ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে চট্টগ্রাম নেভাল জেটিতে এসে পৌঁছায়।