ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর:- যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে জাতি ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় বিদস উদ্যাপন করেছে। সকাল দশটায় জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে বিজয় দিবস কুচকাওয়াজ ২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন।
উক্ত কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, এমপি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ (General Aziz Ahmed), এসবিপি, বিএসপি, বিজিবিএম, পিবিজিএম, বিজিবিএমএস, পিএসসি, জি, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী, এনবিপি, ওএসপি,বিসিজিএম,বিসিজিএমএস, এনডিসি, পিএসসি (Aurangzeb Chowdhury), বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বিবিপি, ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি (Masihuzzaman Serniabat) মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানান। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকার, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যগণ, সংসদ সদস্যগণ, উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ এবং বৈদেশিক কুটনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মহান বিজয় দিবস কুচকাওয়াজ ২০১৯ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সশস্ত্র বাহিনীর বিভাগের তত্ত¡াবধানে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯ পদাতিক ডিভিশনের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, সশস্ত্র বাহিনী, আধা সামরিক বাহিনী এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এ কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করে। বিজয় দিবস প্যারেড-২০১৯ এর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ৯ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং এবং সাভার এরিয়া কমান্ডার, মেজর জেনারেল মোঃ আকবর হোসেন এবং উপ-অধিনায়কের দায়িত্বপালন করেন ৭১ মেকানাইজড ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদ। উক্ত কুচকাওয়াজে বিভিন্ন বাহিনীর সর্বমোট ২৪টি কন্টিনজেন্ট মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে সালাম প্রদান করে। কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারী সম্মিলিত যান্ত্রিক বহরের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন ৯ আর্টিলারি ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রকিব উদ্দিন খান।
কুচকাওয়াজের যান্ত্রিক বহরে সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সম্বলিত অত্যন্ত আকর্ষনীয় ও সুসজ্জিত গাড়ী বহর অংশগ্রহণ করে। এছাড়া আর্মি এভিয়েশন, নেভাল এভিয়েশন ও র্যাব এভিয়েশনের ফ্লাইপাষ্ট, দু:সাহসিক প্যারা কমান্ডো সদস্যদের ফ্্িরফল জাম্প এবং Special Team Insertion and Extraction(STIE) অপারেশন ডিসপ্লে কুচকাওয়াজকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে।
বিভিন্ন যান্ত্রিক বহরের প্রদর্শনীর পরই শুরু হয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এক মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট ও এরোবেটিক ডিসপ্লে¬। বিমান বাহিনীর ফ্লাইপাস্টের নেতৃত্ব দেন এয়ার ভাইস মার্শাল মো: সাঈদ হোসেন। উল্লেখ্য, প্রথম বারের মতো সশস্ত্র বাহিনীর ব্যান্ড দলের সাথে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ব্যান্ড কন্টিনজেন্ট দলও এই কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করেন। কুচকাওয়াজ শেষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্যারেডে অংশগ্রহণকারী সকল কন্টিনজেন্ট কমান্ডারদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। নতুন প্রজন্মের নিকট মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার লক্ষ্যে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারসহ প্যারেড গ্রাউন্ডে আসার পথে সড়কগুলোতে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও বিজয় দিবসের চেতনা সম্বলিত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যানার ও বিলবোর্ড ঢাকা শহরে সার্ক ফোয়ারা হতে জাহাঙ্গীর গেইট, বিজয় স্মরণী, বিজয় চত্বর, গণভবন হতে রোকেয়া স্মরণী হয়ে আগারগাঁও এবং রাসেল চত্বর হয়ে আমিন বাজার পর্যন্ত স্থাপন করা হয়। এই সকল ব্যানার ও বিলবোর্ড সমূহের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধ তথা বাঙলি জাতির অমর ইতিহাসের ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটানো হয়। এছাড়া, প্যারেড গ্রাউন্ডে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ছাড়াও কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারী সকল বাহিনীর উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডের ছবি প্রদর্শিত হয়েছে।
প্যারেড গ্রাউন্ডের সাজসজ্জায় এবং পোডিয়ামের উভয় পার্শ্বে স্থাপিত বিভিন্ন বিলবোর্ড ও ফেষ্টুনে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক জাতীয় পতাকার লাল ও সবুজ দুটি রং।
মহান বিজয় দিবস কুচকাওয়াজ সুষ্ঠু ও সার্থক করতে গণপূর্ত অধিদপ্তর, পিডিবি, ঢাকা ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন, টিঅ্যান্ডটি, ডেসকো, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পিডব্লিউডি, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর ও স্থাপত্য অধিদপ্তর এর সহযোগিতা ছিল প্রশংসনীয়।